দ্বিতীয় ম্যাচের উইকেটে হয় এই ম্যাচ, যে উইকেটে বাংলাদেশের ১৪১ রান তাড়ায় নিউ জিল্যান্ড গিয়েছিল ১৩৭ পর্যন্ত। কিন্তু ব্যবহৃত উইকেট এ দিন হয়ে ওঠে আরও মন্থর। টার্ন ও অসমান বাউন্স ছিল নিয়মিত।
উইকেটের ধরন পরখ না করে প্রথম ওভারেই সুইপ করতে গিয়ে নাসুমকে উইকেট উপহার দেন রাচিন রবীন্দ্র। সিরিজে যেটি তার দ্বিতীয় শূন্য।
পরের উইকেটও বলা যায় উপহার। সাকিব আল হাসানকে দারুণ রিভার্স সুইপে বিশাল ছক্কায় তাক লাগানোর পর ফিন অ্যালেন টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। নাসুমকে উইকেট দিয়ে আসেন তিনি রিভার্স সুইপ খেলেই।
তিন ওভারে দুই উইকেট হারানো দলকে উদ্ধারের চেষ্টা করেন টম ল্যাথাম ও উইল ইয়াং। আগের ম্যাচের মতোই এক-দুই করে রান বাড়িয়ে দলকে টেনে নেওয়ার কৌশল নেয় নিউ জিল্যান্ড।
তবে দলের রান পঞ্চাশ ছাড়াতেই থমকে যায় এই জুটি। শেখ মেহেদি হাসানকে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে খেলার চেষ্টায় ল্যাথাম স্টাম্পড হন ২১ রানে।
ইনিংসের বাকিটায় এক প্রান্তে লড়াই চালিয়ে যান ইয়াং, আরেক প্রান্তে উইকেট ধরা দেয় নিয়মিত। নাসুম নিজের শেষ ওভারে দারুণ দুটি ফ্লাইটেড ডেলিভারিতে বিভ্রান্ত করেন হেনরি নিকোলস ও কলিন ডি গ্র্যান্ডহোমকে। শেষ দিকে মুস্তাফিজের কাটার ও দলের দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে উইকেট ধরা দেয় একের পর এক।
নিজের বলে অসাধারণ এক ফিরতি ক্যাচে কোল ম্যাকনকিকে ফেরান মুস্তাফিজ। তার শেষ ওভারে ইয়াং বিদায় নেন ৪৮ বলে ৪৬ রান করে। নিউ জিল্যান্ডের শেষ ৭ ব্যাটসম্যানের একজনও ছুঁতে পারেননি ৫।
লক্ষ্য সহজ হলেও বাংলাদেশের রান তাড়ার শুরুটা হয় কঠিন। লিটন দাস বিদায় নেন তৃতীয় ওভারে। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে এজাজ প্যাটেল ফেরান সাকিব ও মুশফিকুর রহিমকে।
ডাউন দা উইকেট খেলতে গিয়ে সাকিব হারান নিজের উইকেট। মুশফিক দ্বিতীয় বলেই স্লগ সুইপের চেষ্টায় হন বোল্ড। পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ৩২।
মোহাম্মদ নাঈম শেখ ও মাহমুদউল্লাহর জুটি এরপর এগিয়ে নেয় দলকে। তবে স্বস্তিতে খেলতে পারেননি কেউই, ভুগতে থাকেন রানের জন্য। রবীন্দ্র ও এজাজের বোলিং আটকে রাখেন রানের চাকা। দুজন মিলে ৮ ওভারে রান দেন কেবল ১৭!
তবে আরেক স্পিনার কোল ম্যাকনকি ভালো করতে পারেননি। তার ও পেসারদের বোলিংয়েই যা একটু বাড়ে দলের রান।
৩৫ বলে ২৯ রানের ইনিংস খেলে রান আউট হন নাঈম। এরপরই বেঁচে যান মাহমুদউল্লাহ। তিনি তখন আউট হলে, বাংলাদেশের ভাগ্যও যেত ঝুলে। শেষ পর্যন্ত দলের জয় সঙ্গে নিয়েই ফেরেন অধিনায়ক। মুষ্ঠিবদ্ধ হাত বাতাসে ছুঁড়ে উদযাপন করেন জয়।
কিন্তু ম্যাচের প্রাপ্তি নিয়ে যখন সামনে তাকাতে চাইবে বাংলাদেশ, উদযাপনের উপলক্ষ খুব একটা খুঁজে পাওয়ার কথা নয়!
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
নিউ জিল্যান্ড: ১৯.৩ ওভারে ৯৩ (রবীন্দ্র ০, অ্যালেন ১২, ল্যাথাম ২১, ইয়াং ৪৬, নিকোলস ১, ডি গ্র্যান্ডহোম ০, ব্লান্ডেল ৪, ম্যাকনকি ০, এজাজ ৪, টিকনার ২, বেনেট ০*; নাসুম ৪-২-১০-৪, সাকিব ৪-০-২৫-০, মেহেদি ৪-০-২১-১, মুস্তাফিজ ৩.৩-০-১২-৪, সাইফ ৩-০-১৬-১, মাহমুদউল্লাহ ১-০-৭-০)।
বাংলাদেশ: ১৯.১ ওভারে ৯৬/৪ (নাঈম ২৯, লিটন ৬, সাকিব ৮, মুশফিক ০, মাহমুদউল্লাহ ৪৩*, আফিফ ৬*; বেনেট ৩-০-১৭-০, এজাজ ৪-০-৯-২, ম্যাকনকি ৩.১-০-৩৪-১, রবীন্দ্র ৪-০-৮-০, ডি গ্র্যান্ডহোম ৩-০-১৩-০, টিকনার ২-০-১৩-০)।
ফল: বাংলাদেশ ৬ উইকেটে জয়ী।
সিরিজ: ৫ ম্যাচ সিরিজে বাংলাদেশ ৩-১ ব্যবধানে এগিয়ে।
ম্যান অব দা ম্যাচ: নাসুম আহমেদ।
Leave a Reply